পরিবারে সুখী হোন
একদিন এক ভদ্রলোক গাড়িতে
করে তার দুই বাচ্চাকে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছেন। হঠাৎ রাস্তার মধ্যে গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ
হয়ে গেল। ড্রাইভার অনেক চেষ্টা করলেন কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। গাড়ির ইঞ্জিন
স্টার্ট নিচ্ছেনা।
এদিকে স্কুলের সময় পার হয়ে
যাচ্ছে। ভদ্রলোক আর উপায় না দেখে রিকশা খুজতে শুরু করলেন। এই সময়টাতে কিন্তু রিকশা
পাওয়াও টাফ। সবারই ব্যাস্ততা থাকে, সবাই ছুটতে থাকে।
যা হোক অনেকক্ষন পরে
ভদ্রলোক একটা রিকশা পেলেন। কিন্তু রিকশা চালককে দেখে তার সেই রিকশায় উঠতে মন চাচ্ছিল
না।
১৬ বছর বয়সের একটা হালকা
পাতলা কিশোর ছেলে যদি রিকশা চালায়, আমরা অনেকেই কিন্তু সেরকম রিকশায় উঠতে চাইনা। ভয়
করে, যদি অ্যাক্সিডেন্ট করে বসে ?
যাই হোক, সময় নেই দেখে
ভদ্রলোক তার রিকশাতেই উঠলেন। রিকশা চলতে শুরু করল। ভদ্রলোক একটু পরে আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য
করলেন যে, এই হালকা পাতলা অল্প বয়সী কিশোর, সে কিন্তু বেশ দ্রুত গতিতে দক্ষভাবেই
রিকশা চালাচ্ছে এবং তার মধ্যে কোনো জড়তা নেই।
ভদ্রলোক একটি কৌতুহলী হয়েই
তাকে জিজ্ঞেস করলেন – তোমার
কি তিনজন নিয়ে রিকশা চালাতে কোনো কষ্ট হচ্ছেনা?
ছেলেটা বলল আপনারা তো
মাত্র তিনজন, আর আমি পাঁচজনের সংসার চালাই। আমার যদি শক্তি না থাকে তাহলে কেমনে
হবে?
এর পর কথা প্রসঙ্গে
ভদ্রলোক আরও জানলেন যে ছেলেটা তার বৃদ্ধ বাবা, বিধবা বোন, বোনের দুই বাচ্চা সহ
পাঁচজনের খাবার জোগাড় করে রিকশা চালিয়ে। এভাবেই তাদের পরিবারটা টিকে আছে।
এই যে দায়িত্ব নেয়া, এটা
খুব জরুরী বিষয়। এই ছেলেটা যদি দায়িত্ব না নিত কি হত? পুরো পরিবারটাকে রাস্তায়
নামতে হত। ভিক্ষে করতে হত। অপমানজনক জীবন যাপন করতে হত। ছেলেটা দায়িত্ব নেয়াতে কি
হয়েছে? পরিবারটা একটা সম্মানজনক অবস্থানে এসেছে।
আর এটা সম্ভব হয়েছে একজনের
স্যাক্রিফাইসের মাধ্যমে। সে যদি স্বার্থপরের মত দায়িত্ব এড়িয়ে যেত তাহলে কিন্তু
পরিবারটা টিকত না।
আসলে স্বার্থপর মানুষ কখনও
নিজে সুখী হতে পারেনা, অন্যকেও সুখী করতে পারেনা।
নিঃস্বার্থ মানুষই প্রকৃত সুখী।
অতএব পরিবারে যিনি যত বেশি
নিঃস্বার্থ হবেন, যত বেশি স্যাক্রিফাইস মাইন্ডেড হবেন, তিনি তত সুখী হবেন এবং
অন্যকেও সুখী করতে পারবেন।
পরিবার থেকে আমি কি পেলাম
সেটা না দেখে, আমরা সবাই যদি পরিবারে আমি কি দিলাম সেটা দেখি তাহলেই কিন্তু
পরিবারটা সুখের হয়।
পরিবারে সুখের বিষয়টা আমরা
আরেকটু পর্যালোচনা করি একটা উদাহারনের মাধ্যমে।
মনে করুন একটা হল রুমে
কিছু মানুষ উপস্থিত আছেন। তাদের সবার জন্য একটা করে বেলুন আনা হল। প্রত্যেকের
বেলুনে তার নাম লেখা আছে।
এখন সবাইকে যদি বলা হয় নিজের
নাম লেখা বেলুনটি খুঁজে নিতে তাহলে কি হবে, হুড়োহুড়ি পড়ে যাবে। বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি
হবে। খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে দু এক জনের বেলুন ফেটেও যাবে।
কিন্তু সবাই যদি একটা করে বেলুন
হাতে নিয়ে বেলুনের গায়ে যার নাম লেখা আছে তাকে ডেকে বেলুনটি দিয়ে দেয়। তাহলে
কিন্তু সহজেই সবাই নিজের বেলুনটি পেয়ে যাবে।
আমাদের পরিবারে সুখের
বিষয়টাও এরকম। আমরা প্রত্যেকেই যদি পরিবারের অন্য সদস্যদেরকে সুখী করার চেষ্টা করি
তাহলে কিন্তু প্রকৃতির প্রতিদানে আমরা নিজেরাও সুখী হব।
পরিবারে সুখী হবার জন্য
আমাদেরকে কিন্তু কিছু বাঁধাও দূর করতে হবে। এরকম একটা বড় বাঁধা হচ্ছে স্বামী স্ত্রীর
মধ্যে সন্দেহ।
সন্দেহ হল মনের একটা রোগ।
সন্দেহ যখন একবার মনে ঢুকে যায়, তখন সে যন্ত্রণায় ঘুমও হয়না। ০.০১% অবিশ্বাসই
জীবনের শান্তি নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। বিশ্বাস আর সংশয় পাশাপাশি থাকতে পারেনা।
প্রয়োজনে বিয়ে করার আগে বহুবার ভাববেন যে, আপনি যাকে বিয়ে করছেন তাকে বিশ্বাস করতে
পারবেন কি না। যদি মনে হয় পারবেন না, তাহলে বিয়ে করবেন না। কিন্তু বিয়ে করার পরে
সন্দেহ করবেন না। বিয়ের পরে সন্দেহ করতে শুরু করলে পরিবার আর জাহান্নামের মধ্যে
কোনো তফাৎ থাকবে না। তাই কান কথায় প্রভাবিত হবেন না। সন্দেহ করার মত একেবারে
প্রত্যক্ষ কোনো কারণ না থাকলে পুরোপুরি বিশ্বাস করবেন।
দাম্পত্য জীবনকে সুখী করার
জন্য মেডিটেশন আর অটোসাজেশন কিন্তু বেশ কাজে দেয়। মেডিটেশনের মধ্যে পুরুষরা নিজেকে
অটোসাজেশন দেবেন “আমার স্ত্রীর মত এত ভালো স্ত্রী পৃথিবীতে আর
নেই”। মহিলারা অটোসাজেশন দেবেন “আমার স্বামীর মত এত ভালো স্বামী পৃথিবীতে আর
নেই”। মেডিটেশনে মনের বাড়িতে তাকে এনে বলুন যে,
আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি। তার গুণগুলোকে সবসময় অবলোকন করুন। নিয়মিত মেডিটেশনে এই
চর্চা করতে থাকলে আপনি বাস্তবেও সুখী হবেন।
সুখী হবার জন্য কিন্তু
পরিবারে ছোট খাট ভুল ত্রুটি ক্ষমা করাও শিখতে হবে। একজন ভদ্রলোক নিজের মেয়েকে
যেভাবে ক্ষমা করতে পারেন সেভাবে যদি নিজের স্ত্রীকেও ক্ষমা করতে পারেন তাহলে
কিন্তু পরিবারে প্রশান্তি থাকে। একজন ভদ্রমহিলা নিজের ছেলেকে যেভাবে ক্ষমা করতে
পারেন সেভাবে যদি নিজের স্বামীকেও ছাড় দিতে পারেন তাহলে কিন্তু পরিবারে প্রশান্তি
থাকে।
সুখী সম্পর্ক তৈরীর আরেকটি
পদক্ষেপ হল ভাল কথা। আমরা অনেক সময় কথা প্রসঙ্গে বলি – শুধু কথায় চিড়ে ভেজেনা। আসলে কিন্তু কখনও কখনও ভেজে।
এক ভদ্রলোক তার স্ত্রীকে
অনেক ভালবাসেন। ভালবেসে অনেক কষ্ট করে তার জন্য একটা বাড়ি তৈরী করে দিয়েছেন।
কিন্তু তবুও স্ত্রীর মন খারাপ। একদিন কথায় কথায় ভদ্রমহিলা তার স্বামীকে বলেই
ফেললেন – তুমিতো আমাকে ভালই বাসনা। শুনে তো ভদ্রলোকের
মেজাজ খারাপ। কি ? ভালবাসিনা ? তাহলে এই
যে এত কষ্ট করে যে বাড়ি বানিয়ে দিলাম, সেটা কিসের জন্য ? ভদ্রমহিলা বললেন- কই,
কোনো দিন তো মুখে বললে না।
দেখেন দেখি অবস্থা।
ভদ্রলোক যদি শুধু একটু মুখে বলতেন ভালবাসার কথা তাহলে এত পরিশ্রম করে আর বাড়ি
বানানোর ঝামেলায় যেতে হতনা। স্ত্রীর মন এমনিতেই ভালো থাকত।
কথার প্রভাব নিয়ে জাপানী
বিজ্ঞানী ডঃ মাসারু ইমোটো একটা অদ্ভুত গবেষণা করেছিলেন। তিনি একজন গবেষক এবং লেখক।
তার লেখা একটা বিখ্যাত বই আছে, দা হিডেন মেসেজেস ইন ওয়াটার। এই বইটা লেখার আগে
তিনি দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন পানি নিয়ে। মানুষের কথা পানির মলিকুলার স্ট্রাকচারকে
কিভাবে প্রভাবিত করে সেটাই ছিল তার গবেষণার বিষয়বস্তু।
এই পরীক্ষাটা করা হত কিভাবে – প্রথমে পানির সামনে কিছু কথা বলা হত। এরপর সেই পানিকে ফ্রোজেন করে বিশেষ
ক্যামেরার সাহায্যে এর ক্রিস্টাল স্ট্রাকচারের ছবি তোলা হত।
একবার পানিকে সামনে নিয়ে
বলা হল – তুমি পচা পানি, তোমার কারণে আমরা অসুস্থ হয়ে
যাচ্ছি। তোমার কারণেই পানি বাহিত বিভিন্ন রোগ হয়।
আরেকবার বলা হল – তুমি কত ভালো পানি, তোমাকে আমরা কত পছন্দ
করি। তুমি কত মিষ্টি পানি।
দেখা গেল যে, পানির সামনে যখন
খারাপ কথা বলা হয়েছে তার ক্রিস্টাল স্ট্রাকচার বিচ্ছিরি হয়ে গেছে।
আবার যে পানিকে ভালো কথা
বলা হয়েছে তার ক্রিস্টাল স্ট্রাকচার অপূর্ব সুন্দর হয়েছে।
ডঃ মাসারু ইমোটোর একজন
মুসলিম সহকর্মী ছিলেন। তিনি একবার বিসমিল্লাহ বলে একটা গ্লাস থেকে কিছুটা পানি
খেয়ে বাকিটা রেখে দিয়েছিলেন। সেই গ্লাসের পানির ক্রিস্টাল স্ট্রাকচারও দেখতে খুব
সুন্দর হয়েছিল। অনেকটা ঝাড়বাতির মত।
এই গবেষণা থেকে ডাঃ মাসারু
ইমোটো এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে সামান্য এক গ্লাস পানি, তার উপরেই যদি কথার এত
প্রভাব পড়ে তাহলে এইযে আমাদের মানবদেহের ৬০-৭০% ই পানি তার ওপর কথার প্রভাব কতখানি
!
কথার প্রভাব সম্পর্কে
কিন্তু বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থেও বলা হয়েছে।
সুরা ইব্রাহিম এর ২৪ নম্বর
আয়াতে আল্লাহ বলেছেন – একটি
ভালো কথা একটি ভালো গাছের মত, যার শিকড় রয়েছে মাটির গভীরে আর শাখা প্রশাখার
বিস্তার দিগন্তব্যাপী, যা সারা বছর ফল দিয়ে যায়।
বাইবেলে আছে – যে রুঢ় কথা বলে সে নিজের সর্বনাশের পথ
উম্মোচিত করে। (হিতোপদেশ ১৩:৩)
বেদ এ বলা হয়েছে – কর্কশ স্বরে কথা বলনা। তিক্ত কথা যেন মুখ
ফসকে বেড়িয়ে না যায়। (যজুর্বেদ – ৫.৮)
ধম্মপদে বলা হয়েছে – কাউকে কটু কথা বলবেনা। কারণ সে ও কটু
প্রত্যুত্তর দিতে পারে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় তোমার জন্যেও কষ্টদায়ক হবে। দন্ডের
প্রতিদন্ড তোমাকেও স্পর্শ করবে। (দন্ডবগগো – ১৩৩)
তাহলে বোঝাই যাচ্ছে যে
পরিবারে শান্তির জন্য ভালো কথা কত প্রয়োজন।
একটা কথা আমরা কিন্তু
দুভাবে বলতে পারি। কথার টোনটা ভালো হতে পারে আবার খারাপও হতে পারে।
যেমন ধরুন- কারও ক্ষিদে
পেয়েছে। তিনি যদি বলেন – খাবার
দাও । তাহলে কথাটা শোনায় আদেশের মত।
আবার তিনি যদি বলতেন -
আমার ক্ষিদে পেয়েছে। তাহলে এর মধ্যে একটা অনুরোধের সুর থাকে। অন্যের মধ্যে সেটা
একটা মায়ার জন্ম দেয়।
পরিবারে সুখের জন্য আরেকটা
বিষয় বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে, সেটা হল সালাম। পরিবারে আমরা যদি নিয়মিত
সালামের চর্চা করি তাহলে কিন্তু প্রশান্তির সৃষ্টি হয়।
মনে করুন একজন ভদ্রলোক
বাইরে থেকে ক্লান্ত শ্রান্ত আর বিরক্ত হয়ে ঘরে ফিরেছেন। ঘরে ঢোকা মাত্রই স্ত্রী যদি
তাকে মিষ্টি স্বরে সালাম দেয়, তার মনটা কিন্তু ঘরের দরজাতেই অনেকটা ভালো হয়ে যায়।
আবার ধরুন কেউ ঘরে ফিরতে
খুব দেরি করে ফেলেছেন। স্ত্রী রেগে মেগে বসে আছেন। ভদ্রলোক যদি ঘরে ঢুকেই স্ত্রীকে
আন্তরিকতার সাথে সালাম দেন তাহলে কিন্তু তার রাগ অনেকটাই কমে যায়।
কেন?
কারণ সালাম মানে শান্তি। আপনি
যদি আন্তরিকতার সাথে কারও শান্তি কামনা করেন, প্রকৃতিগত কারণেই তিনিও অবচেতন মনে
আপনার কল্যাণ কামনা করবেন। এ অবস্থায় ঝগড়া হতে পারেনা।
অতএব আমরা পরিবারে সালামের
চর্চা নিয়মিত করব এবং সালাম যে দেব সেটা শুধু নিয়ম রক্ষার জন্য দেবনা, সালাম দেব
আন্তরিকতার সাথে, যেন সেটা মানুষের মনকে ছুয়ে যায়। তাহলেই সালামের মাধ্যমে আমরা
পরিবারে সুখের সূচনা করতে পারব।
পরিবারে সুখের জন্য সবচেয়ে
বড় পদক্ষেপ হল ইতিবাচকতা। আর ইতিবাচক আমরা তখনই থাকতে পারব যখন আমরা নিয়মিত
মেডিটেশন করব। নিয়মিত মেডিটেশন করলে আমাদের ব্রেইনে সেরোটোনিন নামের একটা হরমোন
উৎপন্ন হয়।
এই সেরোটোনিনকে কিন্তু গুড
ফিলিং হরমোন বলা হয়। অনেক বিজ্ঞানী এটাকে হ্যাপি হরমোনও বলেন।
যার দেহে সেরোটোনিন হরমোন
বেশি উৎপন্ন হয় তিনি সবসময় প্রশান্ত থাকেন, তার মধ্যে শুকরিয়া বেশি থাকে। এ ধরনের
মানুষকে যদি সামান্য ভর্তা ভাজি দিয়েও ভাত দেয়া হয় শুকুর আল হামদুলিল্লাহ বলে খেয়ে
উঠবেন।
আর যার দেহে সেরোটোনিন কম
থাকে তার মধ্যে সবসময় কেমন যেন একটা বিরক্তি ভাব কাজ করে। এ ধরনের মানুষকে পোলাও
মাংস রেধে খাওয়ালেও সন্তষ্ট হয়না, হয়তো বলেই ফেলবে “কি দিলা মাংসটাতো সিদ্ধই হয় নাই”।
অতএব কি করতে হবে?
পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়মিত মেডিটেশন করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
জোরাজুরি করবেন না। শুধু চেষ্টা
করবেন তাদের মধ্যে উৎসাহ, উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে। কারণ জোরাজুরির ফল কখনও ভালো হয়
না। বরং মানুষ যেটা আনন্দ নিয়ে শেখে সেই শিক্ষাটাই কিন্তু মনে গেথে থাকে। কখনও
মুছে যায়না।
পরিবারের সুখটাকে আমরা কেন
এত গুরুত্ব দিচ্ছি ? কারণ পারিবারিক সুখটা হচ্ছে, পারিবারিক শান্তিটা হচ্ছে সমাজে
শান্তির পূর্ব শর্ত। সমাজে শান্তি তখনই আসবে যখন পরিবারে শান্তি থাকবে।
তাই আসুন আমরা পরিবারে সুখী হবার চেষ্টা করি, সমাজে শান্তির পরশ ছড়াই।
পরিবারে সুখী হোন
- Product Code: পরিবারে সুখী হোন
- Availability: Out Of Stock
-
Tk. 0
- Ex Tax: Tk. 0