• জীবনে সফল হবার জন্য চাই সুস্থতা



জীবনে সফল হবার জন্য চাই সুস্থতা

 

একটা বিষয়ে আমরা মনে হয় সবাই একমত হব যে, স্রষ্টার যত নেয়ামত আছে তার মধ্যে সুস্থতা অন্যতম। কারণ সুস্থতা ছাড়া স্রষ্টার অন্য নেয়ামতগুলোকে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করা যায়না। এমনকি নিজের প্রতিভাকেও শতভাগ কাজে লাগানো যায়না।

 

সুস্থতা বলতে আমরা অধিকাংশ মানুষই বুঝি শুধু শারীরিক সুস্থতাকে। কিন্তু আসলে শরীর এবং মন দুটোই যখন সুস্থ থাকে তখনই কেবল পরিপূর্ণ সুস্থতার স্বাদ অনুভব করা যায়।

 

আমরা যদি সুস্থ শরীরের পাশাপাশি মনকেও প্রশান্ত রাখতে পারি তাহলে আমাদের কর্মক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবেআমরা পূর্ণ উদ্যম নিয়ে কাজ করতে পারব।

 

আজকে আমরা শরীর এবং মনকে সুস্থ রাখার কিছু পদ্ধতি সম্পর্কে জানব। এগুলো আমরা আসলে সবাই জানি তারপরেও আবার একটু রিভিউ করা।

 

১। দমচর্চাঃ

 

কোনো রকম বাড়তি পয়সা খরচ না করে, কোনো রকম ভারি পরিশ্রম না করেই আমরা আমাদের শরীরকে আরও একটু প্রাণবন্ত করতে পারি একটা কাজের মাধ্যমে, সেটা হল দমচর্চা। আমরা যদি বুক ফুলিয়ে দম নেই তাহলে আমাদের শরীরে বাড়তি অক্সিজেন প্রবেশ করে এর ফলে  শরীর প্রাণবন্ত হয়, অবসাদ দূর হয়, কাজের স্পৃহা বাড়ে।

 

দমচর্চা খুব সহজ। মেরুদন্ড সোজা করে কোমরে দুই হাত রেখে দাঁড়াবেন। নাক দিয়ে ধীরে ধীরে বুক ভরে দম নেবেন। একটু সময় থামবেন। এর পরে ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে দম ছাড়বেন। দম নেবার চেয়ে ছাড়তে সময় একটু বেশি নেবেন।

 

এভাবে ১৯ বার দম নিলে এক দফা হবে। সারা দিনে এরকম ৫-৬ দফা করবেন দু-তিন দিনের মধ্যেই আপনি টের পাবেন যে আপনার প্রাণশক্তি কিছুটা বেড়ে গেছে।

 

২। খাবারঃ

 

সুস্থতার জন্য আরেকটা বিষয়ে আমাদের মনোযোগী হতে হবে সেটা হল খাবার। খাবারের বিষয়ে অনেকেরই ভুল ধারণা থাকে যে বেশি খেলেই মনে হয়  বেশি বেশি শক্তি পাওয়া যাবে। আসলে এ ধারণাটা ভুল। আমাদের প্রত্যেকেরই পাকস্থলীর একটা লিমিট থাকে। যখনই আমরা এই লিমিটের বেশি খাবার খাই তখনই আমাদের শরীর অবসাদ্গ্রস্থ হয়

 

অথচ আমরা যদি নবী করিম (সাঃ) এর নির্দেশমত পাকস্থলীর তিনভাগের একভাগ খাবার এবং একভাগ পানি গ্রহণ করে বাকি একভাগ খালি রাখি তাহলে কিন্তু খাবার খেয়ে আমাদের শরীর কখনো অবসাদগ্রস্থ হবে না বরং নতুন প্রাণশক্তি অর্জন করে আমরা পূর্ণ উদ্যমে কাজ শুরু করতে পারব।

 

খাবারের ব্যাপারে আরেকটা বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে সেটা হল যতটা সম্ভব ঘরের খাবার খেতে হবে। বাইরের খাবার যত কম খাওয়া যায় ততই ভাল। আসলে যে খাবার মমতা নিয়ে তৈরী হয়না সে খাবার কখনও পুষ্টি দিতে পারে না।  

 

খাবারের ব্যবসার কথা চিন্তা করে দেখেন। খাবারের ব্যাবসা করতে গেলে দু দিক থেকে চ্যালেঞ্জ ফেইস করতে হয়। টেস্ট হতে হবে অন্যদের চাইতে ভাল আবার দাম হতে হবে কমএ কারণে অসৎ ব্যাবসায়ীরা কি করেন, নিম্নমানের খাদ্য উপাদানের সাথে বিভিন্ন ক্ষতিকর কেমিক্যাল দিয়ে মজার খাবার তৈরী করেনঅতএব একেবারে বাধ্য না হলে বাইরের খাবার না খাওয়াই ভাল।

 

খাবারের বিষয়ে সম্প্রতি অনেকেই একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটা হল চিনি বর্জন। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি বেশি চিনি খান তারা দ্রুত বুড়ো হয়ে যান। অতএব তারুণ্যকে ধরে রাখতে চাইলে খাবারের তালিকা থেকে চিনি বাদ দিতে হবে

 

৩। ব্যায়ামঃ

 

তারুণ্যকে ধরে রাখার জন্য এবং সুস্থ থাকার জন্য আমরা আরেকটা কাজ করতে পারি সেটা হল কোয়ান্টাম ব্যায়াম। এত সহজ একটা জিনিস অথচ আমরা করিনা। নিজের ঘরের মেঝেতে বসে করা যায়। প্রতিদিন দশ মিনিট করে করলেও হয়। কিন্তু করিনা।

 

আসলে আমরা ভুলটা কোথায় করি? যখন ব্যায়াম করা শুরু করি তখন এক সাথে ১৫-১৬টা করে আসন করি। আবার যখন ছাড়ি সব এক সাথে ছাড়ি। কেন ? দৈনিক চার-পাচটা করি তাও প্রতিদিন করি। নিয়মিত কোয়ান্টাম ব্যায়াম করলে আমাদের শারীরিক সক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে।

 

৪। মেডিটেশনঃ


শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তি অর্জনও গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের শরীর যতই ভাল থাকুক, মন যদি প্রশান্ত না থাকে তাহলে কিন্তু সুস্থতা পরিপূর্ণ হয় না। আর মন প্রশান্ত রাখতে নিয়মিত মেডিটেশন খুব চমৎকার কাজ করে। সকাল বেলা মেডিটেশন করলে সারা দিনের কাজ গুলো প্রশান্ত মনে করা যায়। আর দিনের শেষে মেডিটেশন সারাদিনের শারীরিক মানসিক ক্লান্তি গুলোকে দূর করে দেয়।

 

আমরা যদি নিয়মিত দুই বেলা মেডিটেশনটাকে ঠিক রাখি তাহলে কিন্তু শরীরও ভাল থাকে। কেন জানেন?  কারণ আমরা যখন গভীর শিথিলায়ন করি  তখন আমাদের দেহে কর্টিসোল কমে।

 

কর্টিসোল হচ্ছে আমাদের শরীরের প্রধান স্ট্রেস হরমোন। এটার প্রয়োজন আছে। কিন্তু এই হরমোনটা সবসময় যদি শরীরে বেশি থাকে তাহলে কিছু প্রবলেম দেখা দেয় যেমন উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা বেড়ে যায়, হতাশার সৃষ্টি হয়, মাথা ব্যাথা করে, হার্টের অসুখ দেখা দেয়, স্মৃতি শক্তি এবং মনোযোগ কমে যায়, হজম শক্তি কমে যায়, ঘুমের সমস্যা দেখা দেয় এমনকি ওজনও বেড়ে যেতে পারে।

 

সুতরাং আমরা যদি নিয়মিত দু বেলা মেডিটেশনের মাধ্যমে এই কর্টিসোল হরমোনের লেভেলটাকে একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পারি তাহলে আমাদের শরীর এবং মন দুটোই প্রশান্ত থাকবে।

 

তাই আসুন আমরা নিয়মিত নিজের যত্ন নেই এবং সুস্থতার একটা চর্চার মধ্যে থাকি।

 

মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবাইকে পরিপূর্ণ সুস্থতা সহকারে প্রশান্তিময় দীর্ঘ জীবন দান করুন।

Write a review

Note: HTML is not translated!
    Bad           Good

জীবনে সফল হবার জন্য চাই সুস্থতা

  • Product Code: জীবনে সফল হবার জন্য চাই সুস্থতা
  • Availability: Out Of Stock
  • Tk. 0

  • Ex Tax: Tk. 0